ধামরাইয়ে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে এলাবাসীদের মানববন্ধন-বিক্ষোভ

ধামরাই প্রতিনিধিঃ-
ঢাকার ধামরাইয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে সেলিম তালুকদার নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে নিহতের স্বজন এবং এলাকাবাসীরা। অদ্য ৩০/১১/২০২২ইং বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের আড়ালিয়া বাজার এলাকায় এ মানববন্ধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। আয়োজিত মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রনহকারী আপশপাশের অন্তত পাঁচটি গ্রামের শত শত নারী-পুরুষসহ সব বয়ষের লোকজন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, গত ৪১ দিন আগে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের সাত্তার, জাহিদ, দ্বীন ইসলাম, লিটন, জহিরুল, জব্বার ও লাল মিয়া গং কৃষক সেলিম তালুকদারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল কাদের বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখহ অজ্ঞানামা ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৩৩) দায়ের করেন। কিন্তু এতোদিনেও পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। নিহতের ৫ শ্রেনী পড়–য়া ছেলে সাব্বির তালুকদার বলেন, জনি নিয়ে বিরোধের জেরে সাত্তার, জাহিদ, দ্বীন ইসলাম, লিটন, জহিরুল, জব্বার ও লাল মিয়া গংরা আমাদের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছিলো। তখন আমাবার বাবা বাঁধা দিতে গেলে তারা আমার বাবাকে আমার চোখের সামনেই কোদাল দিয়ে বাড়ি দেয় এবং পরে তার উপর উঠে এলোপাথারিভাবে পাড়িয়ে হত্যা করে।

এঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও এখনও পুলিশ আমার বাবার খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। নিহতের বাবা আব্দুল কাদের তালুকদার বলেন, খুনিরা পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। পুলিশ এসে নিষেধ করে গেলেও তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক আমাদের জমি থেকে মাটি কাটতে শুরু করে। এঘটনা আমরা বাঁধা দিতে তারা আমার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করে এবং আমাদেরকেও মারধর করে। পৃথিবীতে সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ। আমি সেই হতভাগা যাকে নিজের ছেলের লাশ কাঁধে নিতে হয়েছে। তবে ৪১ দিন পার হলেও এখনও পুলিশ একজন খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাহলে কি দেশে আইনের শাসন নেই। আমি অনতি বিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার এবং ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। নিহতের ছোটভাই শাহিন তালুকদার বলেন, আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করার ৪১ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করাতো দুরের কথা আমাদের পরিবারের কাউকে একটু শান্তনা দিতেও আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে আজকে আমরা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হলে আমরা গ্রামবাসীদের নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবো। আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এলাকার জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, দিনমজুরসহ বিভিন্ন শ্রেনিপেশার শত শত লোকজন স্বাতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিয়ে হত্যাকারীতে ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ স্থানীয় মেম্বার সঞ্জয় সরকার ও যুবলীগ নেতা শীতল সরকারের নের্তৃত্বে খুনিরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। বিভিন্ন সময়ে তারা সাধারন মানুষের উপর অত্যাচার করলেও দলিয় কর্মী এবং প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি হওয়ায় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনা। ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, কৃষক সেলিম হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হত্যাকারীদের তিন জন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে। এছাড়া মামালাটি বর্তমানে পিবিআইতে হস্থান্তর করা হয়েছে। তাদের পাশাপাশি আমরাও আসামীদের গ্রেপ্তারে তৎপর আছি। খুব দ্রুত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। প্রসঙ্গত: গত ২১ অক্টোবর ধামরাই উপজেলার আড়ালিয়া বড়াকৈর এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে স্থানীয় সন্ত্রাসী সাত্তার, জাহিদ, দ্বীন ইসলাম, লিটন, জহিরুল, জব্বার ও লাল মিয়া গং কৃষক সেলিম তালুকদারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল কাদের বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখহ অজ্ঞানামা ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-৩৩) দায়ের করেন।